দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের পতনের পর চাঁদাবাজি কমেছে পরিবহন খাতে। স্বস্তি ফিরেছে আরও বেশ কয়েকটি অঙ্গনে। বাজারে স্বাভাবিক রয়েছে নিত্যপণ্যের সরবরাহও। তবে দাম কমেনি, কমছে না। বরং চাল, পেঁয়াজ, সবজি, মাছ, ডিম, ও মুরগির দাম আগের তুলনায় বেড়ে গেছে।
রাজধানীর তালতলা, আগারগাঁও ও কাওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ টাকা, এবং প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ডিমের দাম ৫৫ টাকা, মাঝারি মানের চাল ৬০ টাকা, এবং মোটা চাল ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রফতানির খবরে ইলিশের দাম কেজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে, যা বাজারে অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদফতর। নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা এবং প্রতিটি ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। তবে মূল্য নির্ধারণের ১০ দিন পার হলেও বাজারে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। বরং দাম বেড়েছে—মুরগির দাম এখন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা।
সবজির বাজারেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। গোল বেগুনের দাম ৮০ থেকে ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, এবং টমেটো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির দামও ৫০ টাকার নিচে নেই।
বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দেয়। ডিমের দাম বৃদ্ধির জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দায়ী করা হচ্ছে, এবং এ বিষয়ে তারা কাজ করছেন।
মরিচ ও পেঁয়াজের দাম আবারো বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি মরিচ ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দামও বেড়েছে—বর্তমানে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নিয়ন্ত্রণে নেই চালের বাজারেও। মোটা চাল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, এবং সরু চাল ৬৪ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভারতে রফতানির কারণে ইলিশ মাছের দামও বেড়ে গেছে। এক কেজি ইলিশ ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা, এবং দেড় কেজির ইলিশ ২৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য মাছের দামও বেড়েছে।
তালতলা বাজারে কথা হয় আতাউর রহমান নামের একজন চাকরিজীবীর সঙ্গে। তিনি জানান, বাজারের দাম বেড়েছে, এবং বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। এ কারণে তাকে বাজারের ফর্দ থেকে ডিম ও ডাল বাদ দিতে হয়েছে।
বাজার তদারকি নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দেয়। ডিমের দাম বৃদ্ধির জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দায়ী করা হচ্ছে, এবং এ বিষয়ে তারা কাজ করছেন।