নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে থানাতে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন পুলিশ সদস্যরা।
জানা যায়, ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে দেশে অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে অনেক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্য নিহত হন। আহত হন কয়েক হাজার সদস্য। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন। এরপর ৬ আগস্ট থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ পুলিশ অধস্তন কর্মচারী সংগঠন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বেশির ভাগ থানার পুলিশসহ বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা কর্মবিরতিতে চলে যান। এতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। ঘটে অগ্নিসংযোগ, ডাকাতি, লুটপাট ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধ।
এ ছাড়া সাধারণ মানুষ থানায় বিভিন্ন ঘটনার অভিযোগ জানাতে এসে ফিরে যান। বিষয়টি নজরে আসে পুলিশ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ ইউনিটের কর্মকর্তা ও ফোর্সকে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যার মধ্যে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। কিন্তু এরপরও পুলিশ সদস্যরা থানায় যোগ না দিয়ে ১১ দফা দাবি জানিয়ে তাদের কর্মবিরতি চালিয়ে যেতে থাকেন। জেলা পুলিশ লাইন্সে বিক্ষোভ কর্মসূচিও করেন তারা।
১১ দফা পূরণ না হওয়া অবধি ও পুলিশে সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফিরবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন পুলিশ সদস্যরা।
রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে পুলিশকে কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকের পর পুলিশে সংস্কারের দাবিতে কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ক পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও কনস্টেবল শোয়াইব হাসান। সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে তারা সবাই কাজে যোগ দেয়ারও ঘোষণা দেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার কর্মরত পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে ফেরেন।এসময় তাদের সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপরই সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও অভিযোগ নেয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক ও পাড়া-মহল্লায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, সোমবার সকাল থেকে থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা যোগ দেন। এ ছাড়া পুলিশের টহলও চলছে। সাধারণ মানুষের চাহিদা বিবেচনা করেই পুলিশ আবারও দায়িত্ব পালন করছে। জনগণের জানমাল রক্ষায় পুলিশ সর্বদা নিয়োজিত রয়েছে।