
আলমগীর হোসেন খানসামা, দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের (হাজী পাড়া) এলাকায় ভুট্টাক্ষেত থেকে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়া্রি) সকালে
প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে জনৈক ব্যাক্তি মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার করে এলাকার লোকজন ডেকে পরে পুলিশে খবর দিলে উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের ইলিয়াস (হাজী পাড়া) এলাকার ভুট্টাক্ষেত থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় সু্ত্রে জানা যায়, উদ্ধারকৃত তরুণী উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের ইলিয়াস হাজী পাড়ার মৃত আলম ইসলামের মেয়ে এবং একই ইউনিয়নের দুবলিয়া দোলাপাড়ার মাহফুজ আলমের স্ত্রী আনিছা খাতুন (১৯)।
ঘটনার পর থেকেই ওই
তরুণীর স্বামী মাহফুজ আলম পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহতের পরিবার সুত্রে জানা যায়, বছর খানেক আগে পার্শ্ববর্তী চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুরে এক গার্মেন্টস কোম্পানিতে
চাকুরীরত অবস্থায় আনিছা খাতুন (১৯) এর সাথে দোলাপাড়া
এলাকার মাহফুজ আলমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্ক থেকে তারা দুজন বিয়ে করেন কিন্তু মাহফুজ আলমের পরিবার রাজি না থাকায় বিয়ের
পর থেকেই সে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী
আনিছা খাতুনকে নিয়ে বসবাস করত।
গত ২-৩ মাস
আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে সম্পর্কের অবনতি হলে সে অন্যত্র বসবাস
করেন। মাঝেমধ্যে ঐ এলাকায় গিয়ে
স্ত্রী আনিছার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতেন মাহফুজ আলম।
গত সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায়
স্ত্রী আনিছা খাতুনকে তার বাসায় নেওয়ার জন্য আসেন মাহফুজ আলম।
পরে শাশুড়ি রোকেয়া বেগমের উপস্থিতিতে স্ত্রীকে নিয়ে যান মাহফুজ আলম।
পরদিন মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে
ওই এলাকার হাজীপাড়া সংলগ্ন ভুট্টা ক্ষেতে মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহতের মা রোকেয়া বেগম
বলেন, "প্রেম করে বিয়ে হওয়ার এক বছর হলেও
জামাইয়ের পরিবারকে যৌতুক দিতে না পারায় মেয়ে
আমাদের বাসাতেই ছিল। গত সোমবার সন্ধ্যায়
জামাই মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসলে আমরা পাঠিয়ে দেই কিন্তু পরের দিন সকালে মেয়ের লাশের কথা শুনে হতবাক। কে জানে এমন
ঘটনা ঘটবে? তিনি আরও বলেন, আমার সহজ-সরল মেয়ের হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে"।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজমূল হক বলেন, "নিহত
আনিছা খাতুনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে, রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত
কারণ জানা যাবে"। এই ঘটনায়
মামলা প্রক্রিয়াধীন জানিয়ে তিনি আরও জানান, "সন্দেহজনক এই মৃত্যুর রহস্য
উদঘাটন ও জড়িতদের বিরুদ্ধে
কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশ কাজ করছে"।