দাগনভূঞা প্রতিনিধি:
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলা ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) ডাক্তার মিজানুর রহমান ব্যক্তিগত সহকারী ছাড়া রোগী দেখেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে তিনি পার্সোনাল সহকারি নিয়োগ দেন তমা নামে এক নারীকে। প্যাডে সাইন দিয়ে রেখে দেওয়া সেই প্রেসক্রিপশন প্যাডে যথারীতি রোগী দেখছেন তমা। কর্তৃপক্ষের নিয়মকে তোয়াক্কা না করে সহজ সরল রোগীদের বোকা বানিয়ে রোগী দেখছেন ডাক্তার মিজানুর রহমান ও তমা। এ নিয়ে সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে রোগী দেখা নিয়ে। অনেকেই দেখছেন এটিকে অপচিকিৎসা হিসেবে।
সরেজমিনে জানা যায়, দাগনভূঞা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহিঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে পাঁচশ অধিক রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। হাসপাতালে ছয় নম্বর কক্ষে ডিপ্লোমা ডাক্তার মিজানুর রহমান যথারীতি বসলেও তিনি গত ৩মাস যাবত তমা নামে এক মহিলাকে নিজ কক্ষে বসান। তমা এক সময়ে এ হাসপাতালে ইন্টার্নি করেছেন। ডাক্তার মিজান সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তমাকে দিয়ে রোগী দেখাচ্ছেন যেখানে অনেক জটিল রোগীগনও চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন প্রতিনিয়ত। এ সুযোগে ডাক্তার মিজান কর্তব্যরত অবস্থায় ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটান বাহিরে। এছাড়া ডাক্তার মিজান গত বছর বিভিন্ন অনিয়ম, যথাসময়ে রোগী না দেখা ও হাসপাতালে না আসা, ইমার্জেন্সিতে ডিউটি না করা, আওয়ামী শাসনামলে উচ্চমহলের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, আবাসিক ভবনে অনৈতিক কর্মকান্ডসহ ক্ষমতার দাপট ব্যবহার করতেন তিনি। হাসপাতালের উর্ধতন কতৃপক্ষ কিছু বিষয়ে অবগত হলে ২০২৩ সালে বদলি করেন সুজাতপুর উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে থেকে আবার যোগদান করেন দাগনভূঞা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেকমো প্রতিনিধিত্বকারী ডাক্তার মিজানুর রহমান যা ইচ্ছে তাই বাস্তবায়নে হাসপাতালের নিয়মনীতি ভঙ্গ করছেন এমন মন্তব্য কর্তব্যরত চিকিৎসকদের।
এ বিষয়ে ডাক্তার মিজানুর রহমান জানান, এ্যাসিসটেন্ট রেখেছি রেজিষ্টার খাতা লিখার জন্য। তমা কোন রোগী দেখেন না। আমাকে সহযোগিতা করার জন্য রেখেছি। ব্যক্তিগত সহকারী রাখলে কতৃপক্ষের অনুমতি লাগে এমনটা আমার জানা নেই। সাদা প্যাডে স্বাক্ষর কেন রেখেছেন জানতে চাইলে তা অস্বীকার করেন। রাখলেও তা দোষের কিছু নয় বলেও জানান তিনি। প্রেসক্রিপশন প্যাডে মিজান লেখা স্বাক্ষরিত প্যাডে তমা চিকিৎসাপত্র হিসেবে বিভিন্ন ঔষধ লিখছেন এ বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেন তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম জানান, উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই সহকারী তমাকে দিয়ে রোগী দেখাচ্ছেন বিষয়টি অবগত হয়েছি তবে এটি সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। কিছু অনিয়মের বিষয়ে তাকে ইতিপূর্বে সতর্ক করা হয়েছিল। তিনি এমন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখলে উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা সহ প্রশাসনিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।