চবি প্রতিনিধি,
সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্য নিরসনে লাগাতার আন্দোলন ও ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফরম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের সাথে সারাদেশের সড়ক ও রেলপথ ব্লক করে দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার (১০-ই জুলাই ২০২৪) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকাল ৯ টা ৪০ মিনিটের শাটলে ষোলোশহর হয়ে দেওয়ান হাট এসে চট্টগ্রামের সাথে দেশের সর্বত্র রেলযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং নগরীর টাইগার পাস এলাকা অবরোধ করে সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারি চাকুরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরির সকল কোটা বাতিল করে সরকার পরিপত্র জারি করে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম আদালতে রিট করলে আদালত গত ৫-ই জুন ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে ৫৬% কোটা বহালের আদেশ দেন, এতেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম নেয়।
তবে ২০১৮ সালে সরকারি চাকুরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরির কোটা নিয়ে আন্দোলন হলেও এবার সরকারি চাকরির সব গ্রেডে সব মিলিয়ে ৫% কোটা রাখার দাবি জানিয়ে আজ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেলপথ এ অবরোধ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের প্ল্যাটফরমটির অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এদিকে কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী।
আবেদনটি আজ আপিল বিভাগে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুরে এ আদেশ দেন। কোটা নিয়ে বিচারাধীন মামলায় শিক্ষার্থীদের পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদনকে ‘ইতিবাচক’ বর্ণনা করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, "কোটা বিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সঠিক পথে হাঁটছেন।" মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, "শিক্ষার্থীরা এ মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য আপিল বিভাগে দরখাস্ত করেছে। আমি এটাকে সাধুবাদ জানাই। এখন তারা তাদের বক্তব্য আদালতে দেবে। আমি আশা করব, যেহেতু তারা আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করবে।" তবে আন্দোলনকারীরা বলেন, যে দুজন শিক্ষার্থী হাইকোর্টে আপিল করেছেন, তারা তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
আদালতের কথা উল্লেখ করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, "আদালতে বিচারাধীন কোটা নিয়ে আমাদের আন্দোলন নয় আমাদের আন্দোলন নির্বাহী বিভাগের কাছে সরকারি চাকুরিতে সকল গ্রেডে সকল কোটা প্রত্যাহার করে শুধু সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীদের জন্য সর্বোচ্চ ৫% কোটা রেখে আইন পাস করার জন্য"।
চট্টগ্রামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, "আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ছি না, এটা শুধু যৌক্তিক কোটা সংস্কারের দাবি না এটা আমাদের বাঁচার দাবি, এটা আমাদের দেশকে যোগ্য আমলা দিয়ে পরিচালনা করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি"।