বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারী স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আনন্দ টিভিতে বার্তা বিভাগে ডেপুটি নিউজ এডিটর হিসেবে যোগদান করেছেন প্রশান্ত দাস কথা।
তিনি জানান, আনন্দ টিভির একটি নিজস্ব স্বকীয়তা আছে। আমি চেষ্টা করব বার্তা বিভাগকে নতুন কিছু দিতে। মানুষ শুধু সংবাদ শুনতে চায় না, দেখতেও চায় আমি সেই কথাটি মাথায় রেখে সংবাদ বিন্যাস করব। আনন্দ টিভি সংবাদের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সঠিক তথ্য তুলে ধরে মানুষের কাছে আনন্দ টিভি কে পৌঁছে দিতে কাজ করবো। সমগ্র বাংলাদেশের আনন্দ টিভির নতুন সহকর্মীদের সাথে নিয়ে নতুন ভাবে কাজ করার অনুভূতি আলাদা, নতুন কিছু করতে পারাটা অনেক আনন্দের। আমি বিশ্বাস করি দর্শকরা এখানে নতুনত্ব পাবে এবং নতুন অনেক তথ্য পাবেন।
তিনি আরও বলেন, আনন্দ টেলিভিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান ও এম ডি মহোদয়ের সঠিক নির্দেশনায় আনন্দ টিভি একটি পরিবার হয়ে আমরা সবাই একসাথে কাজ করতে পারব। প্রত্যাশা করি সবাই আনন্দের সাথে আনন্দ টেলিভিশনের সঙ্গেই থাকবেন। টেলিভিশনের মূল প্রাণভোমরা হচ্ছে দর্শক। দর্শকদের উপরেই নির্ভর করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করব। দর্শকদের চাওয়া পূরণ করাই হবে আনন্দ টিভির মূল উদ্দেশ্য।
প্রশান্ত দাস কথা মিডিয়াতে প্রশান্ত কথা কিংবা কথা নামেই সমধিক পরিচিত। বাবা অজিত দাস আর মাতা মঞ্জু রানী দাস-এর ঘর আলো করে বাগেরহাট জেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের খলসী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে ৪র্থ প্রশান্ত কথা।
প্রাইমারি স্কুলের পড়া শেষ করে হাজী আব্দুল হামিদ মাধ্যমিক স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়। মাধ্যমিকের পাঠ শেষে করে খুলনা পলিটেকনিক ইন্সিটিটিউটে ইলেকট্রিক্যাল বিভাগে অধ্যয়ন করেন। সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করে চলে আসেন ঢাকায়। ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিষয়ে পড়াশুনা করেন।
ছোটবেলা থেকে ডানপিঠে স্বভাবের প্রশান্ত কথা। তখন থেকেই নাচ, গান আর আবৃতির প্রতি ছিলো আলাদা টান। প্রাইমারি স্কুলের থেকে শুরু করে কলেজ পর্যায়েও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। গ্রামের যাত্রাপালা থেকে শুরু বাগেরহাট থিয়েটারে নাটকে অভিনয় করা খুলনা বেতারে উপস্থাপনাসহ বাদ দেননি কোথাও। তার সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রতি ভালোবাসা থামিয়ে রাখা যায়নি। তাইতো লেখাপড়ায় উদাসীন হয়ে ঝুকে পড়েন নাচের দিকে। খুলনার আনন্দধারা সংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকে নৃত্য শিখে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নাচ শেখাতে শুরু করেন। শুধু নাচ নয় অভিনয় উপস্থাপনা ও শুরু করেন বাংলাদেশ বেতার খুলনায়, মঞ্চে এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে। শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে নয় সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন সম্পূর্ণ ভাবে।
কর্মজীবনে ২০০৭ সালে একুশে টেলিভিশনে যোগদান করেন। তার প্রযোজনায় প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। একুশে টেলিভিশনের পরে তিনি বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে যোগ দিয়ে কাজ করেছেন বার্তা বিভাগে।
তার র্নিমাণ করা অনুষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম ধূমতানা, নাচে গানে নাম্বার ওয়ান, তাল, গোল্ডেন মোমেন্টস, টোটাল মিউজিক, মিউজিক বিট, রুপ লাবণ্য, দিনটি কেমন যাবে, ফোনোলাইভ স্টুডিও কনসার্ট, এলাটিং বেলাটিং, ড্যান্স বিট, আলোকিত কোরআন, কারবালা ইত্যাদি।
প্রশান্ত কথা বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও আইপি টিভিতে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন অনলাইন ও আইপিটিভিতে তার উপস্থাপনা নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তার উপস্থাপনায় শ্রেষ্ঠ সংলাপ, হেলথ কেয়ার, আমাদের কথা, অধিকার, দিনটি কেমন যাবে, প্রবাস টাইম, ভুতের কথা দর্শক মহলে পৌঁছেছে।
কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ট্রাব অ্যাওয়ার্ড, সিজিএফপি অ্যাওয়ার্ড, দক্ষিণ এশিয়ার Astrologer’s Society বেষ্ট প্রডিউসার নির্বাচিত হন। নক্ষত্রের নারী, নারী তুমি অনন্যা ফাউন্ডেশন থেকে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা। তিনি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন। কয়েকটি আইপি টিভির প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজেকে যুক্ত করেছেন বিভিন্ন লেখালেখিতে। তার লেখা সিনেমা, নাটক, কবিতা প্রচার হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকাতে।
বেসরকারি এফএম রেডিও স্টেশন রেডিও ধ্বনিতে আর জে হিসেবে কাজ করছেন দীর্ঘদিন।